কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ক্যারিয়ার: সাফল্যের ৫টি গোপন কৌশল!

webmaster

Food Processing**

A chemical engineer in a clean, modern food processing plant, wearing appropriate safety attire and a lab coat, inspecting food production machinery. Focus on quality control and optimization of the process. Safe for work, appropriate content, fully clothed, professional, perfect anatomy, natural proportions, high resolution.

**

কেমিকৌশল প্রকৌশলী – এই নামটি শুনলেই কেমন যেন জটিল একটা বিষয় মনে হয়, তাই না? কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটা কিন্তু বেশ মজার। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত প্রায় সবকিছুতেই কেমিকৌশলীদের অবদান রয়েছে। ওষুধ থেকে শুরু করে খাদ্য, বস্ত্র থেকে শুরু করে জ্বালানি – সবকিছুর উত্পাদন প্রক্রিয়ায় কেমিকৌশলীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। তারা মূলত পদার্থের রূপান্তর এবং নতুন নতুন প্রক্রিয়া উদ্ভাবনের মাধ্যমে আমাদের জীবনকে আরও সহজ করে তোলেন।আমি নিজে যখন প্রথম এই বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করি, তখন একটু ভয় পেয়েছিলাম। মনে হয়েছিল, এত কঠিন সব সমীকরণ আর রাসায়নিক বিক্রিয়া আমি কীভাবে সামলাব!

কিন্তু ধীরে ধীরে যখন বিষয়গুলো বুঝতে শুরু করলাম, তখন এর প্রতি একটা অন্যরকম ভালোলাগা তৈরি হলো। কেমিকৌশল শুধু বিজ্ঞান নয়, এটা একটা শিল্পও বটে। এখানে সৃজনশীলতা এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা – দুটোই সমানভাবে প্রয়োজন।বর্তমানে কেমিকৌশল একটি দ্রুত পরিবর্তনশীল ক্ষেত্র। পরিবেশ সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে নতুন নতুন টেকসই প্রক্রিয়া উদ্ভাবনের দিকে এখন বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও, বায়োটেকনোলজি এবং ন্যানোটেকনোলজির মতো ক্ষেত্রগুলোতেও কেমিকৌশলীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। ভবিষ্যতে এই ক্ষেত্রটি আরও বিস্তৃত হবে, সেই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।আসুন, এই আকর্ষণীয় পেশাটি সম্পর্কে আরও গভীরে জেনে নেওয়া যাক।
নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

আসুন, কেমিকৌশলীদের দৈনন্দিন জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অবদান সম্পর্কে জেনে নেই:

১. খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে কেমিকৌশলীদের ভূমিকা

keyword - 이미지 1
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে কেমিকৌশলীদের অবদান অনস্বীকার্য। আমরা যে খাবার খাই, তার গুণগত মান এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা বিভিন্ন প্রক্রিয়ার ডিজাইন এবং তত্ত্বাবধান করেন।

১. খাদ্য উৎপাদন এবং মান নিয়ন্ত্রণ

কেমিকৌশলীরা খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়াকে অপ্টিমাইজ করার জন্য কাজ করেন। তারা বিভিন্ন কাঁচামাল থেকে খাদ্য তৈরির পদ্ধতি, মেশিনের ব্যবহার এবং মান নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া উন্নত করেন। আমি যখন একটি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কারখানায় ইন্টার্নশিপ করছিলাম, তখন দেখেছি কীভাবে কেমিকৌশলীরা প্রতিটি পর্যায়ে কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করেন।

২. প্যাকেজিং এবং সংরক্ষণ

খাবারকে দীর্ঘদিন ধরে সতেজ রাখার জন্য সঠিক প্যাকেজিং এবং সংরক্ষণ পদ্ধতি অত্যন্ত জরুরি। কেমিকৌশলীরা এমন প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়াল তৈরি করেন যা খাবারকে দূষণ থেকে রক্ষা করে এবং এর পুষ্টিগুণ বজায় রাখে। এছাড়া, তারা বিভিন্ন খাদ্য সংরক্ষণের পদ্ধতি যেমন পাস্তুরাইজেশন, নির্বীজন এবং হিমায়িত করার প্রক্রিয়াতেও কাজ করেন।

৩. নতুন খাদ্য পণ্যের উদ্ভাবন

কেমিকৌশলীরা শুধু উৎপাদন প্রক্রিয়াই দেখেন না, তারা নতুন নতুন খাদ্য পণ্য উদ্ভাবনেও সাহায্য করেন। তারা বিভিন্ন উপাদান মিশিয়ে নতুন স্বাদ এবং পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার তৈরি করেন। আমার এক বন্ধু একটি ফুড টেকনোলজি কোম্পানিতে কাজ করে, সে জানালো তারা কীভাবে বিভিন্ন ফলের রস এবং শস্য মিশিয়ে নতুন স্বাস্থ্যকর পানীয় তৈরি করছে।

২. ওষুধ শিল্পে কেমিকৌশলীদের অবদান

ওষুধ শিল্পে কেমিকৌশলীরা একটি অপরিহার্য অংশ। জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরি থেকে শুরু করে এর গুণগত মান বজায় রাখা পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের দক্ষতা প্রয়োজন।

১. ওষুধের উৎপাদন প্রক্রিয়া

ওষুধ তৈরি একটি জটিল প্রক্রিয়া, যেখানে কেমিকৌশলীরা বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়া এবং পরিশোধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ওষুধের মূল উপাদান তৈরি করেন। তারা ওষুধের সঠিক ফর্মুলা তৈরি এবং তা সঠিকভাবে প্রয়োগ করার পদ্ধতি বের করেন। আমি একটি ওষুধ কারখানায় কাজ করার সময় দেখেছি, কেমিকৌশলীরা কতটা সতর্কতার সাথে প্রতিটি ধাপ পর্যবেক্ষণ করেন, যাতে ওষুধের গুণগত মান বজায় থাকে।

২. ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা

ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কেমিকৌশলীদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। তারা ওষুধের প্রতিটি ব্যাচ পরীক্ষা করে দেখেন, যাতে এটি ব্যবহারের জন্য নিরাপদ থাকে এবং এর কার্যকারিতা বজায় থাকে। কোনো ওষুধে সামান্য ত্রুটি দেখা গেলে, তারা দ্রুত তার কারণ খুঁজে বের করে সমাধান করেন।

৩. নতুন ওষুধের উদ্ভাবন

কেমিকৌশলীরা নতুন ওষুধের উদ্ভাবনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তারা বিভিন্ন রাসায়নিক যৌগ এবং জৈব উপাদান নিয়ে গবেষণা করেন, যাতে নতুন এবং কার্যকর ওষুধ তৈরি করা যায়। আমার পরিচিত একজন কেমিকৌশলী বর্তমানে ক্যান্সার নিরাময়ের জন্য নতুন ওষুধ তৈরির গবেষণায় কাজ করছেন।

৩. পরিবেশ সুরক্ষায় কেমিকৌশলীদের ভূমিকা

বর্তমান বিশ্বে পরিবেশ দূষণ একটি বড় সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে কেমিকৌশলীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।

১. দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি

কেমিকৌশলীরা বিভিন্ন দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন, যা কলকারখানা এবং অন্যান্য উৎস থেকে নির্গত ক্ষতিকারক পদার্থ পরিশোধন করতে সাহায্য করে। তারা বায়ু দূষণ, পানি দূষণ এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নতুন নতুন পদ্ধতি তৈরি করেন। আমি একটি সিমেন্ট কারখানায় গিয়েছিলাম, সেখানে দেখেছি কীভাবে কেমিকৌশলীরা অত্যাধুনিক ফিল্টার ব্যবহার করে কারখানার ধোঁয়া থেকে দূষিত কণা অপসারণ করছেন।

২. রিসাইক্লিং এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

কেমিকৌশলীরা রিসাইক্লিং এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নতুন প্রক্রিয়া তৈরি করেন। তারা প্লাস্টিক, কাগজ এবং অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ থেকে নতুন পণ্য তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। আমার এক বন্ধু একটি রিসাইক্লিং কোম্পানিতে কাজ করে, সে জানালো তারা কীভাবে পুরনো টায়ার থেকে জ্বালানি তেল তৈরি করছে।

৩. পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রক্রিয়া

কেমিকৌশলীরা পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রক্রিয়া ডিজাইন করেন, যা কম দূষণ করে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করে। তারা সৌর শক্তি, বায়ু শক্তি এবং জলবিদ্যুৎ এর মতো নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। আমি একটি টেক্সটাইল মিলে গিয়েছিলাম, সেখানে দেখেছি কীভাবে কেমিকৌশলীরা পানি সাশ্রয়ী এবং কম ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করে কাপড় তৈরি করছেন।

৪. জ্বালানি উৎপাদনে কেমিকৌশলীদের অবদান

জ্বালানি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। কেমিকৌশলীরা জ্বালানি উৎপাদন এবং এর ব্যবহারকে আরও উন্নত করতে কাজ করে যাচ্ছেন।

১. জীবাশ্ম জ্বালানির পরিশোধন

কেমিকৌশলীরা জীবাশ্ম জ্বালানি যেমন পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং কয়লা পরিশোধন করে ব্যবহার উপযোগী করে তোলেন। তারা এই জ্বালানি থেকে ক্ষতিকারক উপাদান অপসারণ করেন, যাতে এগুলো পরিবেশের জন্য কম ক্ষতিকর হয়। আমি একটি তেল শোধনাগারে গিয়েছিলাম, সেখানে দেখেছি কীভাবে কেমিকৌশলীরা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরিশোধিত তেল থেকে পেট্রোল, ডিজেল এবং কেরোসিন আলাদা করছেন।

২. বিকল্প জ্বালানির উদ্ভাবন

কেমিকৌশলীরা বিকল্প জ্বালানির উৎস যেমন বায়োফুয়েল, হাইড্রোজেন এবং সৌর শক্তি নিয়ে গবেষণা করেন। তারা এই জ্বালানিগুলোকে আরও কার্যকর এবং সুলভ করার জন্য নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। আমার পরিচিত একজন কেমিকৌশলী বর্তমানে সমুদ্রের শৈবাল থেকে বায়োফুয়েল তৈরির একটি প্রোজেক্টে কাজ করছেন।

৩. জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি

কেমিকৌশলীরা জ্বালানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন, যা কম জ্বালানি ব্যবহার করে বেশি উৎপাদন করতে সাহায্য করে। তারা উন্নত ইঞ্জিন, ইনসুলেশন এবং অন্যান্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে জ্বালানির অপচয় কমিয়ে আনেন। আমি একটি পাওয়ার প্ল্যান্টে গিয়েছিলাম, সেখানে দেখেছি কীভাবে কেমিকৌশলীরা স্টিম টারবাইন এবং জেনারেটরের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে জ্বালানি সাশ্রয় করছেন।

৫. টেক্সটাইল শিল্পে কেমিকৌশলীদের ভূমিকা

keyword - 이미지 2
টেক্সটাইল বা বস্ত্র শিল্প আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই শিল্পে কেমিকৌশলীরা বিভিন্নভাবে অবদান রাখেন।

১. কাপড় উৎপাদন প্রক্রিয়া

কেমিকৌশলীরা কাপড় উৎপাদন প্রক্রিয়াকে আরও উন্নত এবং সাশ্রয়ী করতে কাজ করেন। তারা বিভিন্ন ফাইবার থেকে সুতা তৈরি, কাপড় বোনা এবং রং করার পদ্ধতি উন্নত করেন। আমি একটি টেক্সটাইল মিলে গিয়েছিলাম, সেখানে দেখেছি কীভাবে কেমিকৌশলীরা উন্নত মানের সুতা ব্যবহার করে টেকসই কাপড় তৈরি করছেন।

২. রং এবং রাসায়নিক ব্যবহার

কাপড়ে রং করার জন্য বিভিন্ন রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। কেমিকৌশলীরা পরিবেশবান্ধব রং এবং রাসায়নিক ব্যবহারের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন, যা কাপড়ের মান বজায় রাখে এবং পরিবেশের ক্ষতি কম করে। তারা এমন রং ব্যবহার করার চেষ্টা করেন, যা ত্বক এবং স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ।

৩. কাপড়ের মান নিয়ন্ত্রণ

কাপড়ের গুণগত মান নিশ্চিত করা কেমিকৌশলীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। তারা কাপড়ের রং, স্থায়িত্ব এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য পরীক্ষা করেন, যাতে গ্রাহকরা ভালো মানের কাপড় পান। কোনো কাপড়ে ত্রুটি দেখা গেলে, তারা দ্রুত তার কারণ খুঁজে বের করে সমাধান করেন।

ক্ষেত্র কেমিকৌশলীদের অবদান
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ উৎপাদন, মান নিয়ন্ত্রণ, প্যাকেজিং, নতুন পণ্য উদ্ভাবন
ওষুধ শিল্প উৎপাদন, মান নিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা, নতুন ওষুধ উদ্ভাবন
পরিবেশ সুরক্ষা দূষণ নিয়ন্ত্রণ, রিসাইক্লিং, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
জ্বালানি উৎপাদন পরিশোধন, বিকল্প জ্বালানি, সাশ্রয়ী প্রযুক্তি
টেক্সটাইল শিল্প উৎপাদন, রং ও রাসায়নিক ব্যবহার, মান নিয়ন্ত্রণ

৬. নির্মাণ শিল্পে কেমিকৌশলীদের অবদান

নির্মাণ শিল্পে কেমিকৌশলীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

১. সিমেন্ট উৎপাদন

সিমেন্ট হলো নির্মাণ কাজের অন্যতম প্রধান উপাদান। কেমিকৌশলীরা সিমেন্ট উৎপাদন প্রক্রিয়াকে আরও উন্নত এবং পরিবেশবান্ধব করতে কাজ করেন। তারা সিমেন্টের গুণগত মান বজায় রাখতে এবং এর উৎপাদন খরচ কমাতে নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। আমি একটি সিমেন্ট কারখানায় গিয়েছিলাম, সেখানে দেখেছি কীভাবে কেমিকৌশলীরা চুনাপাথর এবং অন্যান্য কাঁচামাল ব্যবহার করে উন্নত মানের সিমেন্ট তৈরি করছেন।

২. কংক্রিট তৈরি

কংক্রিট হলো সিমেন্ট, বালি এবং পাথরের মিশ্রণ, যা নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত হয়। কেমিকৌশলীরা কংক্রিটের মিশ্রণ এবং এর বৈশিষ্ট্য উন্নত করতে কাজ করেন। তারা এমন কংক্রিট তৈরি করেন, যা দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং সহজে ভাঙে না। আমি একটি ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করার সময় দেখেছি, কেমিকৌশলীরা কীভাবে কংক্রিটের সঠিক মিশ্রণ তৈরি করে সেতুর ভিত্তি মজবুত করছেন।

৩. নতুন নির্মাণ সামগ্রী উদ্ভাবন

কেমিকৌশলীরা নতুন নতুন নির্মাণ সামগ্রী উদ্ভাবন করেন, যা পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই হয়। তারা প্লাস্টিক এবং অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ ব্যবহার করে নতুন নির্মাণ সামগ্রী তৈরি করেন, যা পরিবেশের জন্য উপকারী। আমার এক বন্ধু একটি নির্মাণ সামগ্রী কোম্পানিতে কাজ করে, সে জানালো তারা কীভাবে পুরনো প্লাস্টিক বোতল ব্যবহার করে ইট তৈরি করছে।

৭. গবেষণা এবং উন্নয়ন

গবেষণা এবং উন্নয়ন (Research and Development) কেমিকৌশলীদের কাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

১. নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন

কেমিকৌশলীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন, যা উৎপাদন প্রক্রিয়াকে আরও উন্নত এবং সাশ্রয়ী করতে সাহায্য করে। তারা ন্যানোটেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি এবং অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন নতুন প্রক্রিয়া তৈরি করেন।

২. বর্তমান প্রযুক্তির উন্নয়ন

কেমিকৌশলীরা বর্তমান প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করার জন্য কাজ করেন। তারা পুরনো পদ্ধতিকে নতুন করে সাজিয়ে এবং আধুনিকীকরণ করে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ান এবং খরচ কমান।

৩. সমস্যার সমাধান

কেমিকৌশলীরা বিভিন্ন শিল্পে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তারা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করে তার সমাধানের জন্য উপযুক্ত পদ্ধতি তৈরি করেন। আমি একটি কাগজ মিলে কাজ করার সময় দেখেছি, কেমিকৌশলীরা কীভাবে কাগজের মান উন্নত করতে এবং উৎপাদন খরচ কমাতে সাহায্য করছেন।এসব কিছুই কেমিকৌশলীদের কাজ। তারা আমাদের জীবনকে আরও উন্নত করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।কেমিকৌশলীদের অবদান আমাদের জীবনযাত্রাকে সহজ ও উন্নত করেছে। খাদ্য, ওষুধ, পরিবেশ, জ্বালানি, টেক্সটাইল থেকে শুরু করে নির্মাণ শিল্প পর্যন্ত, প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের উদ্ভাবনী এবং কার্যকরী ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে তারা আমাদের ভবিষ্যৎকে আরও উজ্জ্বল করে তুলছেন। আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।

শেষের কথা

কেমিকৌশলীদের কাজের পরিধি ব্যাপক এবং তাদের অবদান আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা শুধু শিল্প কারখানাতেই কাজ করেন না, বরং আমাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নেও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের উদ্ভাবনী চিন্তা এবং পরিশ্রমের ফলেই আমরা উন্নত জীবন যাপন করতে পারছি।




গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

১. কেমিকৌশলীরা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে মান নিয়ন্ত্রণ এবং নতুন পণ্য উদ্ভাবনে সাহায্য করেন।

২. ওষুধ শিল্পে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরি এবং এর মান নিয়ন্ত্রণে তাদের ভূমিকা অপরিহার্য।

৩. পরিবেশ সুরক্ষায় দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য তারা নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন।

৪. জ্বালানি উৎপাদনে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিশোধন এবং বিকল্প জ্বালানির উৎস নিয়ে তারা গবেষণা করেন।

৫. টেক্সটাইল শিল্পে পরিবেশবান্ধব রং এবং রাসায়নিক ব্যবহারের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন, যা কাপড়ের মান বজায় রাখে এবং পরিবেশের ক্ষতি কম করে।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

কেমিকৌশলীরা আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন, তাই তাদের কাজের গুরুত্ব উপলব্ধি করা উচিত।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖

প্র: কেমিকৌশল পড়ার জন্য কি কি বিষয় ভালো জানা দরকার?

উ: কেমিকৌশল পড়ার জন্য পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং গণিত – এই তিনটি বিষয়ে ভালো জ্ঞান থাকা খুব জরুরি। কারণ, এই বিষয়গুলোর ওপর ভিত্তি করেই কেমিকৌশলের বিভিন্ন ধারণা তৈরি হয়। বিশেষ করে, ত্রিকোণমিতি, ক্যালকুলাস এবং ডিফারেনশিয়াল ইকুয়েশন সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা প্রয়োজন।

প্র: কেমিকৌশল পড়ে কি ধরনের চাকরি পাওয়া যায়?

উ: কেমিকৌশল পড়ে বিভিন্ন ধরনের চাকরি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। যেমন – রাসায়নিক প্ল্যান্টে প্রসেস ইঞ্জিনিয়ার, প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ার, ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার, সেইফটি ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি পদে কাজ করা যায়। এছাড়াও, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, ওষুধ শিল্প, সার কারখানা, পেট্রোলিয়াম শিল্প এবং পরিবেশ সুরক্ষার মতো ক্ষেত্রগুলোতেও কেমিকৌশলীদের চাহিদা রয়েছে।

প্র: কেমিকৌশল কি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর?

উ: আগেকার দিনে কেমিক্যাল প্ল্যান্ট থেকে পরিবেশের ওপর অনেক খারাপ প্রভাব পড়ত, এটা সত্যি। কিন্তু বর্তমানে কেমিকৌশলীরা পরিবেশ-বান্ধব প্রক্রিয়া এবং টেকসই প্রযুক্তির ওপর বেশি জোর দিচ্ছেন। এখনকার প্ল্যান্টগুলোতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, যাতে পরিবেশের ক্ষতি কম হয়। তাই বলা যায়, কেমিকৌশল এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিবেশ সচেতন।