কেমিকৌশলীদের জন্য সেরা চাকরি: সুযোগ হাতছাড়া করলে বিরাট ক্ষতি!

webmaster

**Chemical Plant Production Engineer:** A busy production engineer in a fertilizer factory, troubleshooting machinery while overseeing the chemical production process. Focus on teamwork and problem-solving skills.

কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে কি ভাবছো, কোন চাকরিটা তোমার জন্য সেরা? আমি যখন প্রথম এই লাইনে আসি, আমারও একই চিন্তা ছিল। বইয়ের পাতায় যা পড়েছি, তার সঙ্গে বাস্তবের কাজের মিল কোথায়, সেটাই ছিল আসল প্রশ্ন। কোন কোম্পানিতে কেমন কাজ হয়, স্যালারি কেমন, আর ভবিষ্যৎ কেমন – সব কিছু নিয়েই একটা ধোঁয়াশা ছিল।আসলে, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর দরজাটা অনেক দিকেই খোলে। তুমি চাইলে প্রোডাকশন প্ল্যান্টে কাজ করতে পারো, যেখানে সরাসরি কেমিক্যাল তৈরি হয়। আবার রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে (R&D) নতুন কিছু আবিষ্কারের সুযোগও আছে। কেউ কেউ তো পরিবেশ সুরক্ষার কাজেও নিজেদের যুক্ত করে।আমি নিজে কয়েকটা কোম্পানিতে ইন্টার্নশিপ করে দেখেছি, প্রতিটা জায়গায় কাজের ধরণ আলাদা। কোথাও হয়তো মেশিনের খুঁটিনাটি জানতে হয়, আবার কোথাও ল্যাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে এক্সপেরিমেন্ট করতে হয়। তবে একটা জিনিস সব জায়গাতেই কমন – সমস্যা সমাধানের দক্ষতা। কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মূল কাজই হল জটিল সমস্যাকে সহজ করে তার সমাধান করা।বর্তমানে, গ্রিন কেমিস্ট্রি (Green Chemistry) আর বায়োটেকনোলজির (Biotechnology) চাহিদা বাড়ছে। তাই এই ফিল্ডগুলোতে ফোকাস করলে ভালো সুযোগ পাওয়া যেতে পারে। ২০৩০ সালের মধ্যে এই সেক্টরগুলো আরও বড় হবে বলে মনে করা হচ্ছে।চলো, এই বিষয়ে আরও নিশ্চিত হয়ে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ক্যারিয়ার: কোন পথে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ?

করল - 이미지 1

১. প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ার: কারখানার প্রাণ

কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পর প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং জনপ্রিয় কাজ। প্রোডাকশন প্ল্যান্টে কী ভাবে কেমিক্যাল তৈরি হচ্ছে, তার পুরো প্রক্রিয়াটা এই ইঞ্জিনিয়াররাই দেখেন। আমার এক বন্ধু প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে একটা ফার্টিলাইজার কোম্পানিতে কাজ করে। সে প্রায়ই বলে যে, তাদের কাজটা অনেকটা যেন একটা বড় সংসারের মতো। কখন কোন মেশিনে কী সমস্যা হচ্ছে, কোথায় কী পরিবর্তন করতে হবে, সব কিছুই তাদের নজরে রাখতে হয়।* তাদের প্রধান কাজ হল প্ল্যান্টের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো এবং সেই সাথে খরচ কমানো। এটা করার জন্য, তারা নিয়মিত ডেটা অ্যানালাইসিস করে এবং কোথায় উন্নতি করা যেতে পারে, তা খুঁজে বের করে।
* আমি দেখেছি, প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারদের টিম ওয়ার্কের ওপর খুব জোর দিতে হয়। কারণ, একটা প্ল্যান্টে বিভিন্ন ধরনের মানুষ কাজ করে, আর তাদের মধ্যে সঠিক যোগাযোগ রাখাটা খুব জরুরি।
* যদি তুমি প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ার হতে চাও, তাহলে তোমাকে সমস্যা সমাধানের দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সেই সাথে, তোমাকে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল প্রসেস এবং মেশিনের ব্যাপারে ভালো ধারণা রাখতে হবে।

২. রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (R&D): নতুনত্বের সন্ধানে

R&D-এর কাজটা অনেকটা গোয়েন্দাগিরির মতো। এখানে তোমাকে নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে ভাবতে হবে এবং সেগুলোকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আমি যখন একটি ওষুধ কোম্পানিতে ইন্টার্নশিপ করছিলাম, তখন R&D-এর কাজটা খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। তারা নতুন ওষুধ তৈরির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা ল্যাবে কাজ করত।* R&D-এর ইঞ্জিনিয়ারদের প্রধান কাজ হল নতুন কেমিক্যাল প্রসেস আবিষ্কার করা এবং সেগুলোকে আরও উন্নত করা। এর জন্য, তারা বিভিন্ন ধরনের এক্সপেরিমেন্ট করে এবং ডেটা সংগ্রহ করে।
* এই ফিল্ডে কাজ করার জন্য, তোমাকে অবশ্যই ক্রিয়েটিভ হতে হবে এবং নতুন কিছু করার সাহস থাকতে হবে। সেই সাথে, তোমাকে সায়েন্টিফিক মেথড এবং স্ট্যাটিস্টিক্যাল অ্যানালাইসিস সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখতে হবে।
* আমার মনে আছে, একবার একটি R&D টিম একটি নতুন ধরনের ব্যাটারি তৈরি করার চেষ্টা করছিল, যা পরিবেশবান্ধব হবে। তারা অনেক দিন ধরে চেষ্টা করার পরে অবশেষে সফল হয়েছিল।

বায়োটেকনোলজি: প্রকৃতির সঙ্গে বিজ্ঞান

১. বায়োপ্রসেস ইঞ্জিনিয়ার: জীবনের রসায়ন

বায়োটেকনোলজি এখন খুবই জনপ্রিয় একটা ক্ষেত্র, যেখানে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন জৈবিক প্রক্রিয়াকে কাজে লাগানো হয়। বায়োপ্রসেস ইঞ্জিনিয়াররা মূলত এই কাজটা করেন। আমি একটি বায়োটেক কোম্পানিতে গিয়েছিলাম, যেখানে তারা বিভিন্ন এনজাইম তৈরি করত।* বায়োপ্রসেস ইঞ্জিনিয়ারদের প্রধান কাজ হল মাইক্রোঅর্গানিজম বা সেল ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রোডাক্ট তৈরি করা। এর জন্য, তাদের ফার্মেন্টেশন, সেল কালচার এবং বায়োরিয়্যাক্টর ডিজাইন সম্পর্কে জানতে হয়।
* এই ফিল্ডে কাজ করার জন্য, তোমাকে বায়োলজি, কেমিস্ট্রি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং – এই তিনটেরই ভালো ধারণা থাকতে হবে। সেই সাথে, তোমাকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মলিকুলার বায়োলজি সম্পর্কেও জানতে হবে।
* আমি দেখেছি, বায়োপ্রসেস ইঞ্জিনিয়াররা খুব ধৈর্য ধরে কাজ করেন, কারণ জৈবিক প্রক্রিয়াগুলো সময় নেয় এবং অনেক সময় অপ্রত্যাশিত ফল দেয়।

২. ফার্মাসিউটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার: জীবন রক্ষাকারী ওষুধ

ফার্মাসিউটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং হল বায়োটেকনোলজির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই ক্ষেত্রে, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জ্ঞান ব্যবহার করে ওষুধ তৈরি এবং তার মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আমি যখন একটি ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করছিলাম, তখন দেখেছি যে, ফার্মাসিউটিক্যাল ইঞ্জিনিয়াররা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।* তাদের প্রধান কাজ হল ওষুধের উৎপাদন প্রক্রিয়াকে অপটিমাইজ করা এবং নিশ্চিত করা যে, ওষুধগুলো নিরাপদ এবং কার্যকরী। এর জন্য, তাদের GMP (Good Manufacturing Practice) সম্পর্কে জানতে হয়।
* এই ফিল্ডে কাজ করার জন্য, তোমাকে অবশ্যই কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাশাপাশি ফার্মাকোলজি এবং টক্সিকোলজি সম্পর্কে জানতে হবে। সেই সাথে, তোমাকে রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স সম্পর্কেও ধারণা রাখতে হবে।
* ফার্মাসিউটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা, কিন্তু এর মাধ্যমে তুমি মানুষের জীবন বাঁচাতে পারো।

পরিবেশ সুরক্ষায় কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার

১. এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ার: প্রকৃতির বন্ধু

পরিবেশ সুরক্ষার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে, তাই এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চাহিদাও বাড়ছে। কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র হিসেবে তুমি এই ক্ষেত্রেও কাজ করতে পারো। আমি একটি এনভায়রনমেন্টাল কনসালটিং ফার্মে গিয়েছিলাম, যেখানে তারা বিভিন্ন শিল্প কারখানার পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন করত।* এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারদের প্রধান কাজ হল দূষণ কমানো এবং পরিবেশের মান উন্নয়ন করা। এর জন্য, তাদের এয়ার পলিউশন কন্ট্রোল, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট এবং ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে জানতে হয়।
* এই ফিল্ডে কাজ করার জন্য, তোমাকে পরিবেশ বিজ্ঞান, কেমিস্ট্রি এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সমন্বিত জ্ঞান থাকতে হবে। সেই সাথে, তোমাকে বিভিন্ন পরিবেশ আইন এবং নীতি সম্পর্কেও জানতে হবে।
* আমি দেখেছি, এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়াররা খুব ডেডিকেটেড হন, কারণ তারা জানেন যে, তাদের কাজ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর পৃথিবী তৈরি করতে সাহায্য করবে।

২. ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার: আবর্জনা থেকে সম্পদ

ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং হল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই ক্ষেত্রে, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জ্ঞান ব্যবহার করে আবর্জনাকে কিভাবে রিসাইকেল করা যায় এবং তা থেকে কিভাবে সম্পদ তৈরি করা যায়, তা নিয়ে কাজ করা হয়।* তাদের প্রধান কাজ হল আবর্জনা সংগ্রহ, পরিবহন এবং প্রক্রিয়াকরণের জন্য নতুন এবং কার্যকরী পদ্ধতি তৈরি করা। এর জন্য, তাদের রিসাইক্লিং টেকনোলজি, কম্পোস্টিং এবং ল্যান্ডফিল ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে জানতে হয়।
* এই ফিল্ডে কাজ করার জন্য, তোমাকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাশাপাশি পরিবেশ বিজ্ঞান এবং অর্থনীতি সম্পর্কে জানতে হবে। সেই সাথে, তোমাকে বিভিন্ন ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট আইন এবং নীতি সম্পর্কেও ধারণা রাখতে হবে।
* ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং একটি সম্ভাবনাময় পেশা, কারণ এটি পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি নতুন ব্যবসার সুযোগ তৈরি করে।

কাজের ক্ষেত্র প্রধান কাজ প্রয়োজনীয় দক্ষতা সম্ভাবনা
প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং উৎপাদন প্রক্রিয়া অপটিমাইজ করা সমস্যা সমাধান, টিম ওয়ার্ক ফার্টিলাইজার, কেমিক্যাল প্ল্যান্ট
R&D নতুন প্রসেস আবিষ্কার ক্রিয়েটিভিটি, সায়েন্টিফিক মেথড ফার্মাসিউটিক্যাল, ব্যাটারি কোম্পানি
বায়োপ্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং জৈবিক প্রক্রিয়া ব্যবহার করে প্রোডাক্ট তৈরি বায়োলজি, কেমিস্ট্রি, ইঞ্জিনিয়ারিং বায়োটেক কোম্পানি
ফার্মাসিউটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ওষুধ উৎপাদন ও মান নিয়ন্ত্রণ ফার্মাকোলজি, GMP ওষুধ কোম্পানি
এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং দূষণ কমানো ও পরিবেশের মান উন্নয়ন পরিবেশ বিজ্ঞান, কেমিস্ট্রি, ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালটিং ফার্ম, সরকারি সংস্থা
ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং আবর্জনা থেকে সম্পদ তৈরি রিসাইক্লিং টেকনোলজি, কম্পোস্টিং রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট, পৌরসভা

ডেটা সায়েন্স ও মডেলিং

১. প্রসেস মডেলিং ইঞ্জিনিয়ার: ভবিষ্যৎ দেখা

আজকাল ডেটা সায়েন্সের চাহিদা বাড়ছে, আর কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র হিসেবে তুমি এই সুযোগটা নিতে পারো। প্রসেস মডেলিং ইঞ্জিনিয়াররা মূলত কেমিক্যাল প্ল্যান্টের বিভিন্ন প্রক্রিয়াকে কম্পিউটার মডেলের মাধ্যমে সিমুলেট করেন। আমি একটি সিমুলেশন সফটওয়্যার কোম্পানিতে ইন্টার্নশিপ করেছিলাম, যেখানে তারা বিভিন্ন কেমিক্যাল কোম্পানির জন্য মডেল তৈরি করত।* তাদের প্রধান কাজ হল প্ল্যান্টের কর্মক্ষমতা বাড়ানো এবং নতুন ডিজাইন তৈরি করা। এর জন্য, তাদের বিভিন্ন সিমুলেশন সফটওয়্যার এবং প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ সম্পর্কে জানতে হয়।
* এই ফিল্ডে কাজ করার জন্য, তোমাকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাশাপাশি ম্যাথমেটিক্স, স্ট্যাটিস্টিক্স এবং কম্পিউটার সায়েন্স সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখতে হবে।
* আমি দেখেছি, প্রসেস মডেলিং ইঞ্জিনিয়াররা খুব খুঁটিয়ে কাজ করেন, কারণ তাদের মডেলের ওপর ভিত্তি করে অনেক বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

২. ডেটা অ্যানালিস্ট: তথ্যের গভীরে

ডেটা অ্যানালিস্ট হিসেবে তুমি কেমিক্যাল প্ল্যান্ট থেকে আসা বিভিন্ন ডেটা বিশ্লেষণ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের করতে পারো। এই তথ্য ব্যবহার করে প্ল্যান্টের কর্মক্ষমতা বাড়ানো যায় এবং সমস্যাগুলো সমাধান করা যায়।* ডেটা অ্যানালিস্টদের প্রধান কাজ হল ডেটা সংগ্রহ, পরিষ্কার এবং বিশ্লেষণ করা। এর জন্য, তাদের বিভিন্ন ডেটাবেস এবং অ্যানালিটিক্স টুল সম্পর্কে জানতে হয়।
* এই ফিল্ডে কাজ করার জন্য, তোমাকে স্ট্যাটিস্টিক্স, মেশিন লার্নিং এবং ডেটা ভিজুয়ালাইজেশন সম্পর্কে জানতে হবে। সেই সাথে, তোমাকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বেসিক জ্ঞান থাকতে হবে।
* আমি শুনেছি, কিছু ডেটা অ্যানালিস্ট এখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) ব্যবহার করে প্ল্যান্টের অপারেশন অপটিমাইজ করার চেষ্টা করছেন।

সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট

১. সাপ্লাই চেইন ইঞ্জিনিয়ার: যোগসূত্র স্থাপন

সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট হল একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র, যেখানে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জ্ঞান ব্যবহার করে পণ্যের উৎপাদন থেকে শুরু করে গ্রাহকের হাতে পৌঁছানো পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটিকে অপটিমাইজ করা হয়। আমি একটি লজিস্টিকস কোম্পানিতে ইন্টার্নশিপ করেছিলাম, যেখানে তারা বিভিন্ন কেমিক্যাল কোম্পানির সাপ্লাই চেইন ম্যানেজ করত।* সাপ্লাই চেইন ইঞ্জিনিয়ারদের প্রধান কাজ হল পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং খরচ কমানো। এর জন্য, তাদের ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট, ট্রান্সপোর্টেশন এবং ওয়্যারহাউজিং সম্পর্কে জানতে হয়।
* এই ফিল্ডে কাজ করার জন্য, তোমাকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাশাপাশি ইকোনমিক্স, স্ট্যাটিস্টিক্স এবং লজিস্টিকস সম্পর্কে জানতে হবে। সেই সাথে, তোমাকে সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার সম্পর্কেও জানতে হবে।
* আমি দেখেছি, সাপ্লাই চেইন ইঞ্জিনিয়াররা খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, কারণ তাদের প্রতিদিন অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়।

২. প্রকিউরমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার: সঠিক জিনিসটি খুঁজে বের করা

প্রকিউরমেন্ট ইঞ্জিনিয়াররা মূলত কোম্পানির জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল এবং সরঞ্জাম কেনেন। তাদের কাজ হল সঠিক দামে সঠিক জিনিসটি খুঁজে বের করা এবং সময় মতো সরবরাহ নিশ্চিত করা।* প্রকিউরমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারদের প্রধান কাজ হল ভেন্ডর নির্বাচন করা, দর কষাকষি করা এবং কন্ট্রাক্ট ম্যানেজ করা। এর জন্য, তাদের মার্কেট অ্যানালাইসিস, কস্টিং এবং নেগোসিয়েশন স্কিল থাকতে হয়।
* এই ফিল্ডে কাজ করার জন্য, তোমাকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাশাপাশি বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং ফিনান্স সম্পর্কে জানতে হবে। সেই সাথে, তোমাকে লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স সম্পর্কেও ধারণা রাখতে হবে।
* আমি শুনেছি, কিছু প্রকিউরমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার এখন ই-প্রকিউরমেন্ট প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সাপ্লাই চেইনকে আরও এফিসিয়েন্ট করার চেষ্টা করছেন।এইগুলো ছাড়াও, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ছাত্রছাত্রীদের জন্য আরও অনেক চাকরির সুযোগ রয়েছে। তোমরা চাইলে সরকারি সংস্থায়, কনসালটিং ফার্মে অথবা শিক্ষকতা পেশায়ও যোগ দিতে পারো। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, নিজের আগ্রহ এবং দক্ষতার সাথে মিলিয়ে সঠিক কাজটি খুঁজে বের করা।

লেখার শেষ কথা

কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ক্যারিয়ারের অনেক পথ খোলা আছে। তোমার আগ্রহ আর চেষ্টা থাকলে যে কোনো একটিতে তুমি সফল হতে পারো। আশা করি এই লেখাটি তোমাদের ভবিষ্যৎ জীবনের পথ দেখাতে সাহায্য করবে। তোমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।

দরকারী কিছু তথ্য

১. কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির চেষ্টা করো।

২. ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের চেষ্টা করো।

৩. বিভিন্ন সফটওয়্যার এবং প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শেখার চেষ্টা করো।

৪. কমিউনিকেশন এবং টিম ওয়ার্কের দক্ষতা বাড়াও।

৫. নতুন নতুন টেকনোলজি সম্পর্কে জানার আগ্রহ রাখো।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ক্যারিয়ার গড়ার জন্য প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং, রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, বায়োটেকনোলজি, ফার্মাসিউটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং, ডেটা সায়েন্স ও মডেলিং, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট এর মতো বিভিন্ন ক্ষেত্র রয়েছে। নিজের আগ্রহ ও দক্ষতা অনুযায়ী সঠিক পথ বেছে নিলে সাফল্য নিশ্চিত।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) 📖

প্র: কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার পর সরকারি চাকরির সুযোগ কেমন?

উ: সরকারি ক্ষেত্রেও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য অনেক সুযোগ আছে। বিভিন্ন ফার্টিলাইজার কোম্পানি, অয়েল রিফাইনারি, এবং পরিবেশ দপ্তরের মতো প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ থাকে। এছাড়াও, সরকারি গবেষণা সংস্থাগুলোতেও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের প্রয়োজন হয়। তবে এই চাকরিগুলো সাধারণত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে হয়ে থাকে। তাই ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়াটা জরুরি। আমার এক বন্ধু যেমন, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা দিয়ে এখন একটি সরকারি তেল শোধনাগারে কাজ করছে।

প্র: ফ্রেশার হিসেবে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর চাকরি পেতে কী কী স্কিল দরকার?

উ: ফ্রেশার হিসেবে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর চাকরি পেতে কিছু বিশেষ স্কিল থাকা দরকার। প্রথমত, বিষয়টির ওপর ভালো জ্ঞান থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, কম্পিউটার এবং বিভিন্ন সফটওয়্যার যেমন – MATLAB, Aspen Plus ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন। তৃতীয়ত, কমিউনিকেশন স্কিল (communication skill) এবং টিমওয়ার্কের (teamwork) ক্ষমতাও খুব জরুরি। আমি যখন প্রথম ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিলাম, তখন আমার এই স্কিলগুলোই কাজে লেগেছিল।

প্র: কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ উচ্চশিক্ষার সুযোগগুলো কী কী?

উ: কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ উচ্চশিক্ষার অনেক সুযোগ রয়েছে। তুমি চাইলে মাস্টার্স (Masters) বা পিএইচডি (PhD) করতে পারো। এছাড়াও, বিভিন্ন স্পেশালাইজেশন (specialization) যেমন – বায়োকেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেটেরিয়াল সায়েন্স ইত্যাদি নিয়েও পড়াশোনা করার সুযোগ আছে। বিদেশেও অনেক ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়। আমার এক সিনিয়র যেমন, জার্মানি থেকে গ্রিন কেমিস্ট্রিতে (Green chemistry) পিএইচডি (PhD) করছে।

Leave a Comment